খুলনা নগরীর খানজাহান আলী রোডে বাগান বাড়ী এলাকার অধিবাসী। আলতাফ হোসেন তার পিতা আর রাহিলা বেগম তার মা। জন্মেছেন ১৯৫২ সালের ১৭ মার্চ। কর্মজীবনে আইনজীবী ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ খুলনা জেলা শাখার অন্যতম সদস্য। তার পৈত্রিক বাসভবন খুলনা আলিয়া মাদ্রাসার সামনে কবির মঞ্জিলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বিপ্লবী পরিষদের সদর দফতর স্থাপন করা হয়।
তিনি খুলনা সিটি ‘ল’ কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ খুলনায় পাক বাহিনীর গণহত্যা শুরু হলে রূপসা নদীর পূর্বপাড়ে হামিদা মঞ্জিলে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ৪ এপ্রিল গল্লামারী রেডিও সেন্টার দখলের যুদ্ধে অংশ নেন। এ যুদ্ধের অধিনায়ক সুবেদার মেজর শেখ জয়নাল আবেদীন, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির হাবিবুর রহমান হাবিব ও মোসলেম শহীদ হন। এ যুদ্ধে পিছু হটে তারা নদী পার হয়ে হামিদা মঞ্জিল থেকে দেবীপুর গার্লস হাইস্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করেন। এক পর্যায়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতের আসামের হাফলং ক্যান্টনমেন্টে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ সময় তার সহযোগী যোদ্ধা আ ব ম নুরুল আলম ও অশোক দেবনাথসহ অনেকেই প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে দেবহাটা সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করেন।
তালার মাগুরা, পাইকগাছা হাইস্কুল, কপিলমুনি ও বিজয়ের ঊষালগ্নে গল্লামারী রেডিও সেন্টার যুদ্ধ তার জীবনের স্মরণীয়। স্বাধীনতার পর কমার্স কলেজে এসে ক্যাম্প স্থাপন ও পরে অস্ত্র জমা দেন।
তিনি কিছুদিন আইন পেশার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে আমেরিকায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ২০০০ সালের ১৩ মে তিনি আমেরিকায় ইন্তেকাল করেন, সেখানেই তার দাফন।
খুলনা গেজেট/এএজে